মোছাঃ সীমা খাতুন
স্টাফ রিপোর্টার
আজ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর, জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ছিল বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও অর্থবহ দিন ৭ নভেম্বর। এদিনে আধিপত্যবাদী চক্রের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আমাদের জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে সিপাহি-জনতা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।
এর মধ্য দিয়ে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমান বীরউত্তমকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে দেশ পরিচালনার গুরুদায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় তাঁর কাঁধে। তিনি ছিলেন এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মহানায়ক। বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। সেদিন সিপাহি-জনতা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে নেমে আসেন।
তাদের সচেতনতা ও দেশপ্রেম সেদিন দেশকে ভয়াবহ এক অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা করে। তাদের ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবের মাধ্যমেই রক্ষা পায় সদ্য অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আধিপত্যবাদ, একনায়কতন্ত্র, একদলীয় শাসন, জনজীবনের বিশৃঙ্খলাসহ তৎকালীন বিরাজমান নৈরাজ্যের অবসান ঘটে। যা দেশের তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পাল্টে দিয়ে দেশ ও জাতিকে এক নতুন পরিচয়ে অভিষিক্ত করে।
অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে দেশে সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরে আসে। এর পর থেকেই ঐতিহাসিক এই দিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বাণী : দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ৭ নভেম্বর জাতীয় জীবনের এক ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সিপাহি-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের অভূতপূর্ব অঙ্গীকার নিয়ে। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত।
পৃথক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখনো দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চূড়ান্ত উত্তরণ হয়নি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, নাগরিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ সাধন করতে হবে। ৫ আগস্টের পরে দেশবাসী কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। কর্মসূচি : মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গল থেকে ১০ দিনের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। আজকের কর্মসূচিতে আছে সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) উদ্যোগে বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) গেট সংলগ্ন বহিরাংশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। আগামীকাল শুক্রবার বিকাল ৩টায় রাজধানী ঢাকায় ও জেলায় জেলায় র্যালি এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে এক বিবৃতিতে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা ও দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। দিবসটি উপলক্ষে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, ১২-দলীয় জোটসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোও নানা কর্মসূচি পালন করছে।